ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

মোটরযানের গতিসীমা নির্দেশিকার বাস্তবায়ন চাইলেন ইলিয়াস কাঞ্চন 

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৮:৪০, ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

সরকার মোটরযানের গতিসীমা নির্দেশিকা জারি করলেও তার বাস্তবায়ন নেই বলে জানিয়ে, দ্রুততম সময়ের মধ্যে এই নির্দেশিকার বাস্তবায়ন চেয়েছেন নিরাপদ সড়ক চাই (নিসচা) চেয়ারম্যান ইলিয়াস কাঞ্চন।

তিনি বলেছেন, ২০২৪ সালে সরকার মোটরযানের গতিসীমা নির্দেশিকা জারি করলেও তা বাস্তবায়ন এবং প্রয়োগের নির্দেশনা না থাকায় এর সুফল মিলছে না। বর্তমান সরকারের উচিত দ্রুততম সময়ের মধ্যে গতিসীমা যথাযথভাবে বাস্তবায়নের জন্য একটি নির্দেশিকা তৈরি করা। 

আজ বৃহস্পতিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘অন্তর্বর্তী সরকারের নিকট প্রত্যাশা’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলন এমনটি জানানো হয়।

বাংলাদেশের সড়ক নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে ইলিয়াস কাঞ্চন বলেন, বাংলাদেশে মানুষের হতাহতের অন্যতম প্রধান কারণ সড়ক দুর্ঘটনা, যা দেশের স্বাস্থ্য ও অর্থনীতির ওপর একটি বড় বোঝা। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশে সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যুর আনুমানিক সংখ্যা ২০১৮ সালে ছিল ২৪ হাজার ৯৪৪ জন, ২০২১ সালে তা বেড়ে হয়েছে ৩১ হাজার ৫৭৮ জনে। অন্যভাবে হিসাব করলে, ২০১৬ সালে প্রতি ১ লাখ জনের মধ্যে মৃত্যুর হার ছিল ১৫ দশমিক ৩ শতাংশ, যা ২০২১ সালে বেড়ে হয়েছে ১৮ দশমিক ৬ শতাংশ। এ ছাড়া বিশ্বব্যাংকের মতে, সড়ক দুর্ঘটনায় দেশের অর্থনীতির আনুমানিক ক্ষতি জিডিপির ৫ দশমিক ১ শতাংশ পর্যন্ত হতে পারে।

সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা বলেন, সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮ পাস করা হলেও তাতে সড়ক নিরাপত্তা সংশ্লিষ্ট অনেক বিষয়ের ঘাটতি ছিল, যার সিংহভাগ ছিল পরিবহন বা যানবাহন কেন্দ্রিক। ফলশ্রুতিতে সড়ক দুর্ঘটনায় মানুষের এবং প্রাণহানির ঘটনা নৈমিত্তিক বিষয়ে পরিণত হয়েছে।

সড়ক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, যেহেতু দেশে সড়ক নিরাপত্তা বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কোনো আইন বা বিধি নেই, তাই সরকারের উচিত একটি সমন্বিত সড়ক নিরাপত্তা আইন প্রণয়ন করা। যা হতে হবে প্রমাণভিত্তিক সাফল্য এবং সেফ সিস্টেম অ্যাপ্রোচের আলোকে। পাশাপাশি বৈশ্বিক পরিকল্পনায় সুপারিশকৃত পাঁচটি ক্ষেত্রকেও (বহুমুখী পরিবহন ব্যবস্থা ও যথাযথ ভূমি ব্যবহার পরিকল্পনা, নিরাপদ সড়ক অবকাঠামো, নিরাপদ যানবাহন, নিরাপদ সড়ক ব্যবহারকারী, দুর্ঘটনা-পরবর্তী ব্যবস্থাপনা) এর আওতাভুক্ত করতে হবে।

সংবাদ সম্মেলনে ইলিয়াস কাঞ্চন বলেন, দেশে সড়ক দুর্ঘটনাতে হতাহতের পরিসংখ্যান জানার জন্য বা তথ্য সংগ্রহের জন্য কোনো কাঠামোগত ব্যবস্থা নেই। সড়ক দুর্ঘটনা সংশ্লিষ্ট সব তথ্য অন্তর্ভুক্ত করে সরকারকে একটি কেন্দ্রীয় তথ্য ব্যবস্থা বা কেন্দ্রীভূত ডেটাবেইস তৈরির উদ্যোগ নিতে হবে। এর মাধ্যমে সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিরোধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের সুযোগ তৈরি হবে। এছাড়াও সরকারের উচিত মোটরসাইকেল চালকদের জন্য স্ট্যান্ডার্ড হেলমেট নির্দেশিকা তৈরি করা।

আগামী ১৮ থেকে ২০ ফেব্রুয়ারি মরক্কোতে অনুষ্ঠিতব্য ৪র্থ গ্লোবাল মিনিস্ট্রিয়াল কনফারেন্স অন রোড সেফটিতে বাংলাদেশ সরকারের প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করতে যাচ্ছে। ইলিয়াস কাঞ্চন বলেন, ‘এই কনফারেন্সের খসড়া ঘোষণাপত্রের প্রতিপাদ্য ‘জীবনের প্রতি অঙ্গীকার’ বিষয়ে সরকারকে যেমন গভীরভাবে পর্যালোচনা করতে হবে, তেমনি খসড়া ঘোষণাপত্রে দেশের অঙ্গীকারগুলোকেও অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। ফলে সেখানে আমাদের দেশের প্রতিনিধিরা অঙ্গীকার করে আসার পরে সেগুলো যেন বাস্তবায়ন করে, শুধুমাত্র বলার জন্য বলে আসলে হবে না।’

এমবি//


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি